Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৭ মে ২০২৪

বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড

২০.০ ভূমিকা:

রেশম শিল্প বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী কৃষিভিত্তিক শিল্প। দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালীকরণে এ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষমতায়ন, বেকারত্ব হ্রাস, গ্রামীণ মহিলাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করাসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে এ শিল্পের ভূমিকা অনস্বীকার্য। রেশম চাষের তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে অল্প সময়ে, কম পরিশ্রমে এ ফসল ঘরে তোলা যায়।

২০.০১ পরিচিতি:

১৯৭৪ সালে উত্তরা গণভবন, নাটোরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজশাহীর রেশম গুটি ও রেশম বস্ত্র দেখে চমৎকৃত হন এবং রেশম শিল্প বিকাশে স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তারই ফলশ্রুতিতে ঐতিহ্যবাহী রেশম শিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড গঠিত হয়। আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন ও আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোই ছিল এ সংস্থার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

রেশম শিল্পের সমন্বিত উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ১৩নং আইনবলে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশন- এই ৩টি পৃথক সংস্থাকে একীভূত করে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং এর প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে অবস্থিত। পুনর্গঠিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ১৪ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন সংস্থার মহাপরিচালক। গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কাজ করছে।

মহাপরিচালকের অধীনে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মোট ৪টি বিভাগ রয়েছে যথা: (১) প্রশাসন বিভাগ (২) অর্থ ও পরিকল্পনা বিভাগ (৩) সম্প্রসারণ বিভাগ এবং (৪) উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বিভাগ। এছাড়াও রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ নিরীক্ষা শাখা, জনসংযোগ শাখা সরাসরি মহাপরিচালকের অধীনে ন্যস্ত রয়েছে।  

রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর ৫টি গবেষণা শাখা যথা: তু্ঁতচাষ, রেশমকীট, সেরি-রসায়ন, সেরি-রোগতত্ত্ব, রেশম প্রযুক্তি শাখা এবং প্রশিক্ষণ শাখা রয়েছে। তাছাড়া এর নিয়ন্ত্রণাধীন রাঙ্গামাটি জেলার চন্দ্রঘোনায় একটি আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্র (আরেগকে) এবং পঞ্চগড় জেলার সাকোয়ায় একটি জার্মপ্লাজম মেইনটেন্যান্স সেন্টার (জিএমসি) রয়েছে।

২০.০২ প্রশাসনিক কাঠামো:

অফিস/ স্থাপনার নাম

সংখ্যা

অবস্থান

বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড প্রধান কার্যালয়

রাজশাহী

আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়

রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ঝিনাইদহ ও রাঙ্গামাটি

জোনাল রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়

ভোলাহাট, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ

রেশম বীজাগার পি-৩

রাজশাহী

রেশম বীজাগার পি-২

বগুড়া ও দিনাজপুর

রেশম বীজাগার পি-১

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ভোলাহাট, মীরগঞ্জ, ঈশ্বরদী, ঝিনাইদহ, রংপুর, কোনাবাড়ী ও ময়নামতি

তুঁতবাগান

ব্রাহ্মণভিটা, ঠান্ডিরাম, সাদামহল, রত্নাই, সনকা, রেইচ্যা ও রুপসীপাড়া

রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র

৫৯

বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সদরে অবস্থিত

চাকী রিয়ারিং সেন্টার

২৭

বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে অবস্থিত

মিনিফিলেচার কেন্দ্র

১৩

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), মীরগঞ্জ (রাজশাহী), দৌলতপুর (কুষ্টিয়া), বাগবাটি (সিরাজগঞ্জ), বড়বাড়ী (লালমনিরহাট), জয়পুরহাট, রানীসংকৈল (ঠাকুরগাঁও), কোনাবাড়ী (গাজীপুর), ঝিনাইদহ, চাটমোহর (পাবনা), ময়মনসিংহ, লামা (বান্দরবান) ও রাজশাহী সদর

রেশম কারখানা

রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁও

 

২০.০৩ পরিচালনা পর্ষদ:

ক)

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী        

:

চেয়ারম্যান

খ)

জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত একজন সংসদ সদস্য    

:

জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান

গ)

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব

:

ভাইস চেয়ারম্যান

ঘ)

রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার

:

সদস্য

ঙ)

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা

:

সদস্য

চ)

অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা   

:

সদস্য

ছ)

কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা  

:

সদস্য

জ)

শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা  

:

সদস্য

ঝ)

মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড  

:

সদস্য-সচিব

ঞ)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত প্রাণিবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ হতে যথাক্রমে ১জন করে মোট ২জন অধ্যাপক (একজন সদস্য মহিলা হবেন) 

:

সদস্য

 

ট)

সরকার কর্তৃক মনোনীত রেশম পোকা পালনকারী, রেশম সুতা উৎপাদনকারী ও রেশম পণ্য ব্যবসায়ীগণের মধ্য হতে সর্বমোট ৩জন প্রতিনিধি (একজন মহিলা প্রতিনিধি থাকবেন)

:

সদস্য

 

 

২০.০৪ ভিশন:

দেশে রেশম চাষ ও শিল্পের সম্প্র্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন।  

২০.০৫ মিশন:  

লাগসই প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল ও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে রেশম খাতের সম্ভাবনাকে পূর্ণ কাজে লাগিয়ে রেশম চাষ ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচন।

২০.০৬ উদ্দেশ্য:

  • রেশম চাষ সম্প্রসারণে সহ‌যোগিতা জোরদারকরণ;
  • মানব সম্পদ উন্নয়ন;
  • সক্ষমতা বৃদ্ধি।

২০.০৭ বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের কার্যাবলি:

১. রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন;

২. রেশম বিষয়ক বৈজ্ঞানিক, কারিগরি ও আর্থিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, সহায়তা এবং উৎসাহ প্রদান;

৩. গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলসমূহ মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ এবং বর্তমানে সংরক্ষিত ও ভবিষ্যতে  সংগৃহিতব্য সকল রেশম পোকার জাত সংরক্ষণ নিশ্চিতকরণ;

৪. উন্নতজাতের তুঁত চাষাবাদের পদ্ধতি উদ্ভাবন;

৫. উন্নতজাতের ডিম পালন, সুস্থ পলু পোকার উদ্ভাবন ও বিতরণ;

৬. রেশম গুটি হতে সুতা আহরণ এবং কাঁচা রেশমের গুণগত মান উন্নয়ন ও  উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনে সকল কাঁচা রেশম যথাযথভাবে যন্ত্রপাতি সজ্জিত স্বয়ংসম্পূর্ণ সিল্ক কন্ডিশনিং হাউস এর মাধ্যমে পরীক্ষা ও গ্রেডিং করার পর বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ;

৭.  চরকা, রিলিং ও ফিলেচারে নিয়োজিত ব্যক্তিদেরকে কারিগরি পরামর্শ/প্রশিক্ষণ প্রদান;

৮.  কাঁচা রেশম ও রেশম পণ্যের মান উন্নয়ন;

৯.  রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের উপর বিভিন্ন উপাত্ত সংগ্রহ ও গ্রন্থনা;

১০. রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের ঋণদানের সুবিধাদি সৃষ্টি;

১১. রেশম শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ রং, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, খুচরা যন্ত্রাংশ ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি ন্যায্যমূল্যে সিল্ক রিলার, উইভার ও প্রিন্টারদের মাঝে সরবরাহের ব্যবস্থা;

১২. দেশে-বিদেশে রেশম ও রেশম সামগ্রী জনপ্রিয় ও বাজারজাতকরণের জন্য প্রচারের ব্যবস্থা;

১৩. রেশম সামগ্রী রপ্তানি করার জন্য রেশম সামগ্রীর মানোন্নয়নের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি এবং সিল্ক রিলার, রিয়ারার, স্পীনার, উইভার এবং

     প্রিন্টাদেরকে প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করা;

১৪. রেশম চাষ ও রেশম শিল্পে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সাধারণ সুবিধার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন, পরিচালনা বাস্তবায়ন;

১৫. কাঁচা রেশম, স্পান সিল্ক ও রেশম পণ্য উৎপাদনের জন্য মিল স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ;

১৬. উপরিউক্ত  কার্যাদি  সম্পাদনের  ক্ষেত্রে  যেরূপ  প্রয়োজনীয়  বা  সুবিধাজনক  হয়  সেরূপ  আনুষঙ্গিক  বা  সহায়ক  সকল  বিষয়ে ব্যবস্থা  গ্রহণ এবং

১৭. সরকার কর্তৃক আরোপিত রেশম উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন দায়িত্ব পালন।

২০.০৮ জনবল কাঠামো:

বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্বখাতভুক্ত অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৫৮১টি। একীভূত তিনটি প্রতিষ্ঠানের সকল জনবল নবগঠিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডে ন্যস্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের জনবলের বর্তমান অবস্থা নিম্নরূপ:

শ্রেণি

অনুমোদিত পদ

পূরণকৃত পদ

শূন্য পদ

১ম

৮৪

২৫

৫৯

২য়

৭২

১২

৬০

৩য়

৩৬৭

৭৬

২৯১

৪র্থ

৫৮

১৭

৪১

মোট

৫৮১

১৩০

৪৫১